রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ অপরাহ্ন
মনসুর আহাম্মেদ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ঠাকুরগাঁও জেলার সর্বত্র চলছে যত্রতত্র পশু জবাই। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই করে বিক্রি হচ্ছে মাংস। আর এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে জেলার মানুষ।
জানা যায়, পৌর শহরের কালিবাড়ি বাজার, গোধুলী বাজার, ঠাকুরগাঁও রোড, পুরাতন বাসস্ট্যাণ্ড, আর্ট গ্যালারী, বিসিক মোড়সহ জেলার প্রত্যেক গ্রাম-গঞ্জের হাট বাজার গুলোতে গরু ছাগল, ভেড়া, মহিষ অবাধে জবাই করার আগে কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করেই জবাই করে মাংস বিক্রি করছে দেদারছে।
আজ বুধবার (১৮ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে জেলা সদরের একমাত্র কসাইখানায় গিয়ে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই করে মাংস তৈরির কাজে ব্যস্ত কসাইরা।
পশু জবাইয়ের রেজিস্টার খাতা দেখতে চাইলে তারা খাতাটি সরিয়ে ফেলে বলেন, খাতা দেখানোতে পৌর সচিব মোঃ রাশেদুর রহমানের নিষেধ আছে।
আজ কোন ডাক্তার পশুর স্বাস্থ্য পরিক্ষা করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন- সৈয়দ নামের এক পশু ডাক্তার নিয়মিত আসতেন কিন্তু তিনি তিন মাস আগে পা ভেঙে অসুস্থ্য হওয়ার পর আর আসেন না।
আর এতে কোনপ্রকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই চলছে পশুর জবাই ও মাংস বিক্রি।
এর আগে গত ১ নভেম্বর রেজিস্টার খাতায় দেখা যায়, বিগত ৩০ দিনের মধ্যে শুধুমাত্র ৯ অক্টোবর ও ১ নভেম্বর পশু জবাইয়ের তালিকা রেজিস্টার খাতায় রয়েছে। সেখানে সকাল ৭ টায় পশু ডাক্তারের সাক্ষর রয়েছে। তবে রেজিস্টার খাতায় স্বাক্ষরকারি ডাক্তারের নাম জানতে চাইলে এর সদুত্তর দিয়ে পারেননি কেউ।
অপরদিকে যেখানে তিন মাস যাবত ডাক্তার আসেন না সেখানে রেজিস্টার খাতায় কার সাক্ষর? এর উত্তর জানতে চাইলে পৌরসভার সচিব মোঃ রাশেদুর রহমানকে দেখিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে পৌরসভার সচিব মোঃ রাশেদুর রহমান জানান, আমাদের পশু ডাক্তার নেই, আমরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি। এ বিষয়ে আমি মেয়রের সাথে কথা বলেছি।
সদর উপজেলার রুহিয়া থানাধীন পাটিয়াডাঙ্গী বাজারে অসুস্থ্য রোগা গরু জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ ওঠে। পরে স্থানীয়দের চাপে জবাই করা খাদ্য অনুপযোগী মাংস মাটিতে পুতে ফেলে। খবর পেয়ে রুহিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বেশির ভাগ রোগাক্রান্ত কুকুর কামরানো পশু বিভিন্ন এলাকা থেকে কম দামে কিনে জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন কসাইরা। এগুলো রাতেই জবাই করে বিভিন্ন এলাকার পাইকারি মাংস বিক্রেতাদের কাছে পাঠিয়ে দেয় তারা।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর পশু জবাই করার বিষয়ে নাম না প্রকাশের সত্যে এক কসাই বলেন, শুনেছি পশু হাসপাতালের ডাক্তাররা গরু ছাগল জবাই করার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন, কিন্তু আমাদের এখানে কোন ডাক্তার আসে না।
পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আলতাফ হোসেনের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে এ ব্যাপারে জেলার সিভিল সার্জন ড. মাহাফুজার রহমান সরকার বলেন, অসুস্থ্য গরুর মাংস খাওয়া অবশ্যই স্বাস্থ্য ঝুঁকি। এ বিষয়ে আমরা আপনার মাধ্যমে অবগত হলাম। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরকে বলবো ব্যবস্থা নিতে।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।